অনলাইন ডেস্ক :
সাবিকুন্নাহার তামান্না যখন ক্লাস নাইনে ভর্তি হন তখন বোরকা পড়ে স্কুলে যেতেন। প্রথমদিকে স্যাররা কিছু বলেননি। কিন্তু হঠাৎ একদিন এক স্যার তাকে দাঁড় করিয়ে বললেন, ‘এই মেয়ে, মুখ খুলো। স্কুলে বোরকা পড়ে আসো কেন?’ স্যারের এরকম ব্যবহারে থতমত খেয়ে গিয়েছিলেন তামান্না। ভয় পেয়েছিলেন কিন্তু তবুও তিনি বোরকা খোলেননি। স্যার রেগে গিয়ে বললেন, ‘মুখ খুলো। না হয় ক্লাস থেকে বের হয়ে যাও। অসহায় তামান্না তখন বের হয়ে গিয়েছিলেন চোখভরা কান্না আর বুকভরা অপমান নিয়ে। কলেজে ভর্তি হতে গিয়েও একই অভিজ্ঞতা অর্জিত হয় তার।
স্যাররা রেজাল্টের প্রশংসা করলেও বাবা যখন বোরকার কথা তুললেন, তখন তাদের মুখ কালো হয়ে গেলো। তাই তামান্না ভর্তি হননি কাছের কলেজে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও থামেনি অপমান। ক্লাসে দাঁড় করিয়ে বিদ্রূপ করা হতো তাকে। হাসাহাসি চলতো বোরকা নিয়ে। ইয়ার্কি করে কেউ কেউ প্রশ্ন করতো- ‘এই বয়সে বিয়ে করলা কেন? তুমি তো মডার্ন না। খ্যাত। ডাকসু নির্বাচনের সময় পোস্টারে তার মাথায় শিং এঁকে দেওয়া হয়েছিল। কালি মাখিয়ে চোখমুখ বিকৃত করা হয়েছিল। অপরাধ একটাই, তিনি হিজাব পড়তেন। বোরকা পড়তেন। কিন্তু সব সহ্য করা সেই তামান্না আজ ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিয়ে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ১০ হাজার ৮৪ ভোট পেয়ে কার্যনির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হলেন।
তার নাম ঘোষণার সাথে সাথে গর্জে উঠলো ক্যাম্পাস।
‘হিজাব! হিজাব!’ হাততালি, উল্লাস, স্লোগানের মাঝে তামান্নার চোখ ভিজে গেলো। সেদিন মনে পড়লো—সেই ক্লাস নাইনের কথা। যেদিন বোরকার জন্য স্যার তাকে ক্লাস থেকে বের করে দিয়েছিলেন।
* তথ্য ও ছবি অনলাইন থেকে সংগৃহীত।