রাকিবুল ইসলাম, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) :
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোহাম্মদ রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে ভ্যাট ও আয়করের নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করে পিআইওর অপসারণ দাবি করেছেন উপজেলার ১১ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ঈশ্বরগঞ্জ প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যানরা এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।
এর আগে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন তারা। অভিযোগে বলা হয়, ২০২৪–২৫ অর্থবছরের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) ও গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা-কাবিটা) প্রকল্পে প্রতিটি কাজের বিপরীতে ভ্যাট, আয়কর ও উৎকোচের নামে প্রায় ২৫ শতাংশ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন পিআইও রেজাউল করিম।
এ ছাড়া বিল-ভাউচার ও মাস্টাররোল সমন্বয়ের নামে প্রতিটি প্রকল্প থেকে ৩ হাজার টাকা করে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগও তোলা হয় তার বিরুদ্ধে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, সরিষা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একরাম হোসেন ভূঁইয়া। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু হানিফা, আঠারবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুবের আলম কবীর রুপক, মাইজবাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুল ইসলাম বাবুল, মগটুলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শিহাব উদ্দিন আকন্দ, সোহাগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সম্রাট কবীর বিপুল এবং উচাখিলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হাসান খান সেলিম।
এ বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রকল্পে যেসব অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। ২০২৫–২৬ অর্থবছরে টিআর, কাবিখা, কাবিটা প্রকল্পে প্রায় ৪ কোটি টাকার বরাদ্দ আসে। সেখানে ইউএনও আমাকে বাদ দিয়ে চেয়ারম্যানদের নিয়ে মিটিং করে প্রকল্প তৈরি করে স্বাক্ষর দিতে বলেন। আমি স্বাক্ষর না দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা রহমান বলেন, ‘প্রকল্পের ফাইলে ভ্যাট-আয়কর কর্তনের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। চেয়ারম্যানদের অভিযোগের বিষয়ে পিআইও নিজেই ভালো জানেন। নীতিমালা অনুযায়ী টিআর, কাবিখা, কাবিটা প্রকল্পের ৮০ শতাংশ বরাদ্দ ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে এবং বাকি ২০ শতাংশ রিজার্ভ ফান্ড হিসেবে উপজেলা পরিষদের আওতায় থাকে। আমি ২০ শতাংশের প্রকল্প তৈরি করে চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে যাচাই–বাছাই করে পিআইওকে স্বাক্ষর দিতে বললে তিনি স্বাক্ষর দেননি। পরে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে তারাও যাচাই–বাছাই করে প্রকল্পগুলোকে সঠিক বলে নিশ্চিত করেছেন।’