মো: আব্দুল মান্নান :
ময়মনসিংহের ফুলপুরে পরকীয়ার প্রতিবাদ করায় শনিবার (১৮ অক্টোবর) ইকবাল হাসান (২৭) নামে এক কাঁচা মাল ব্যবসায়ীকে হত্যা করা হয়েছে।
ওই হত্যার ঘটনায় সাদ্দাম হোসেন (৩০), বাবু ওরফে রৌদ্র (২২), তাদের পিতা শফিকুল ইসলাম শাফী (৬৫) ও মনিরুল (২৪)- এর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জনের বিরুদ্ধে ফুলপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত ইকবালের মা শেফালী আক্তার (৪৮) বাদী হয়ে এ মামলা করেন। ঘটনার পর প্রায় সপ্তাহখানেক অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও কোন আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এজন্য আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারসহ তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে আমুয়াকান্দা গরুহাটা এলাকা থেকে মিছিলসহ এসে ফুলপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন গোল চত্বর এলাকায় নিহতের পরিবারের সদস্যবৃন্দ, আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসী এ কর্মসূচি পালন করেন।
জানা যায়, উপজেলার ভাইটকান্দি ইউনিয়নের রঘুরামপুর গ্রামে একটি পরকীয়ার ঘটনা ঘটে। আপত্তিকর অবস্থায় উহা দেখে ফেলায় ও বিষয়টি স্বামীকে জানানোর ঘটনায় নিহত হন ইকবাল হাসান। নিহত ইকবাল ওই গ্রামের আব্দুল জব্বার ওরফে বাবুল মিয়ার পুত্র। ইকবালের চাচা রমজান আলী ঢাকায় চাকরি করেন। তার স্ত্রী সুহেলা খাতুন সাদ্দাম হোসেন নামে এক ভাতিজার সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এমনকি তাদেরকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন ইকবাল। এই দেখাই তার কাল হয়। দেখার পর বিষয়টি চাচা রমজানকে মোবাইলে জানালে তিনি বাড়িতে চলে আসেন এবং অভিযুক্ত সাদ্দামকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কিন্তু সাদ্দাম বিষয়টি অস্বীকার করেন ও এতে মারাত্মক রাগান্বিত ও উত্তেজিত হন।

পরবর্তীতে ১৮ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাদ্দাম তার মুদির দোকানে উচ্চ আওয়াজে গান বাজাতে থাকলে রমজান তাকে বাধা দেন। এতে কথা কাটাকাটি ও গালিগালাজের এক পর্যায়ে সাদ্দাম লোহার তৈরি সূঁচালো বস্তুর দ্বারা ইকবালের বুকে ঘাই মারে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। এছাড়া চাচা রমজান, রেজাউল ও ইকবালের ছোট ভাই এগিয়ে আসলে তারাও আহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় ইকবালকে উদ্ধার করে ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে পরীক্ষা নীরিক্ষা শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আর বাকিরা চিকিৎসাধীন আছেন। কিন্তু এ ঘটনার পর প্রায় ৬দিন গড়ালেও আজও কোন আসামি গ্রেফতার হয়নি। এর আগে আজ আমুয়াকান্দা বাজার হয়ে মিছিল নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে আসার সময় হারুন নামে একজনের ওপর চড়াও হয় আসামিরা। তারা তাকে মারধর করে বলে বক্তৃতায় জানান হারুন।
এ ব্যাপারে আয়োজিত মানববন্ধনে ফুলপুর থানার ওসি আব্দুল হাদি তার টিমসহ উপস্থিত হয়ে বক্তব্যে বলেন, বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক। আমরা চেষ্টার কোন ত্রুটি করছি না। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে পুলিশ।