• রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:১৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
১৪ ডিসেম্বর ‘অরিয়েট’ আয়োজিত সেশনে যুক্ত হচ্ছেন বিশ্বসেরা গবেষক বিজ্ঞানী ড. সাইদুর রহমান বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিকে বরিশালে বদলি ফুলপুরে পাগড়ী পেলেন বুছ্তানুল কোরআন আবাসিক হাফিজিয়া মাদরাসার ৯ হাফেজ ‘বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি’ নামীয় ফেসবুক পেজ থেকে অসত্য সংবাদ শেয়ারের অভিযোগ ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের ফুলপুরের আসফিয়া খান আর নেই ময়মনসিংহ-২ আসনে রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে মোতাহারের হাতে ফুল তুলে দিলেন যুবদল নেতা আরিফ-মিঠুন ইমাম ও শ্যামলী পরিবহনের দুটি গাড়ি মুখোমুখি সংঘর্ষ ফুলপুর থানার বিদায়ী ওসি মোঃ আব্দুল হাদি বিদায়বেলায় যা বললেন চট্টগ্রামে সিআরএ ‘সম্মাননা স্মারক’ পেলেন কালের কণ্ঠের সাংবাদিক গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু সড়ক দুর্ঘটনা এঁড়াতে চানপুর ব্রিজ এলাকায় রাস্তা সংস্কার, ফুটওভার ব্রিজ হচ্ছে ফুলপুর হাসপাতালের সামনে

বকশীগঞ্জে সাংবাদিক নাদিম হত্যাকারীদের আড়াল করার অপচেষ্টা

Reporter Name / ৮১ Time View
Update : শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫

মোঃ আব্দুল মান্নান :

জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যাকারীদের আড়াল করার অপচেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড মামলার পথেই যেন হাঁটছে বাংলা নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকমের সাবেক জামালপুর জেলা প্রতিনিধি ও একাত্তর টিভির সাবেক উপজেলা সংবাদদাতা গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যা মামলা। দুই বছর গড়ালেও এর কোন অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। তার প্রকৃত হত্যাকারীদের আড়াল করার যেন অপচেষ্টা চলছে। এমনটাই অভিযোগ পরিবারের। শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকালে সাংবাদিক নাদিমের বাড়িতে সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম ও তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত বিডিআর সদস্য আব্দুল করিম সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ সেল বাংলাদেশ –এর চেয়ারম্যান/সেল প্রধান মোঃ খায়রুল আলম রফিক ও তার টিমের নিকট এমন অভিযোগ করেন। মনিরা বেগম বলেন, আমার স্বামী হত্যায় সাধুরপাড়া ইউনিয়নের সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদুল আলম ওরফে বাবু চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে তার ছেলে রিফাতসহ ২৭ জন খুনের সাথে জড়িত থাকলেও চার্জশিটে আনা হয়েছে মাত্র ৯ জনের নাম।


এতে প্রকৃত হত্যাকারীরা আড়ালে থেকে যাচ্ছে। যা আমাদের জন্য হুমকির কারণ। এজন্য প্রকৃত আসামিদের নাম উল্লেখ করে নারাজি দিয়েছি। এখন আদালতে শুনানির অপেক্ষায় আছে। তিনি আরও বলেন, কিছু আসামিকে তখন আটক করা হলেও ওরা এখন জামিনে ছাড়া পেয়ে আমাদেরকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে। এমতাবস্থায় আমরা অসহায়। আমাদের পাশে কেউ নেই। তবে বকশীগঞ্জের সাংবাদিক সমাজ আমাদের সাথে আছেন। তারা সার্বিক সহযোগিতা করছেন এবং খোঁজ খবর রাখছেন। তাদের সাহসেই এগিয়ে যাচ্ছি। আমি আমার স্বামী হত্যার আসামিদের সর্বোচ্চ বিচার চাই। কোটি টাকা নয় শুধু বাংলাদেশটা লেইখ্যা দিলেও আমি এ ব্যাপারে আপস করবো না।


এসময় সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ সেল বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মোঃ খায়রুল আলম রফিক বলেন, ১৯৯২ সন থেকে এ পর্যন্ত ৬৯ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। এসব হত্যাকাণ্ডের সর্বোচ্চ বিচার না হওয়ায় দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের গাজীপুর স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান তুহিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করার সাহস পেয়েছে। শুধু তুহিনকে হত্যা করার পরই সারাদেশের সাংবাদিক সমাজ কেঁদেছেন। কেঁদেছেন দেশের আপামর মানুষও। একইভাবে বকশীগঞ্জের সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যাকাণ্ডটিও একটি আলোচিত ঘটনা ও চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড। হত্যাকারীরা সবাই পেশাদার কিলার। এদেরকে রক্ষা ও আড়াল করতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা বার বারই নাটক তৈরি করছেন। এরা পাড় পেয়ে গেলে জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা জানি, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডে তদন্তের নামে এর রায় ১২৫ বার পিছিয়েছে।  নাদিম হত্যাকাণ্ডে এরকম কিছু যাতে না ঘটে। এরকম হলে সারাদেশব্যাপী কঠোর কর্মসূচি দেবেন সাংবাদিক সমাজ।
এ ব্যাপারে তদারকি করার জন্য সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ সেল বাংলাদেশ ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এ কমিটির প্রধান সিনিয়র সাংবাদিক ‘সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ সেল বাংলাদেশ -এর সহকারী পরিচালক (আইন) দৈনিক আমার বার্তা পত্রিকার সচিবালয় বিটের সিনিয়র রিপোর্টার মোহাম্মদ আলী আবির। এছাড়া তার সাথে রয়েছেন সেলের ময়মনসিংহ জেলা শাখার প্রধান (অনুসন্ধান) মোঃ আব্দুল মান্নান, বকশীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি, উপজেলা প্রেসক্লাব, বকশীগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক জিএম ফাতিউল হাফিজ বাবু ও একজন মানবাধিকার কর্মী। এসময় সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ সেল বাংলাদেশ –এর পরিচালক (জেলা ইউনিট প্রধান) রেজাউল করিম রেজা, সহকারী পরিচালক আনিসুর রহমান রুবেল, সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) আবুল কাশেম ও সহকারী পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) সেলিম সরকার উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বকশীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ উল হাসান, এমদাদুল হক লালন, আল মোজাহিদ বাবু, সাংবাদিক মনিরুজ্জামান লিমন, সাংবাদিক রকিবুল হাসান বিদ্রোহী, সাংবাদিক নাদিমের কন্যা রাব্বিলাতুল জান্নাত, বড়ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন রিফাত (২৪), ছোট ছেলে রিশাদ আব্দুল্লাহ পাপ্পু (১০) প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ সেল বাংলাদেশ -এর নেতৃবৃন্দ সাংবাদিক নাদিমের বাড়িতে যান ও তার পরিবারের খোঁজ খবর নেন।
দেখা যায়, নাদিমের বাড়িঘরের অবস্থা খুবই করুণ। তারা আর্থিক সংকটে ভুগছেন। নাদিম হত্যার পর আয় ইনকামের কেউ না থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন নাদিমের পরিবার। সেখান থেকে নেতৃবৃন্দ বকশীগঞ্জ থানা ভবনে যান। সেখানে বকশীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদের সাথে কথা বলেন নেতৃবৃন্দ। এসময় তাদের সর্বোতভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

তারপর সাংবাদিক নাদিমের কবর জিয়ারত করতে উনার গ্রামের বাড়িতে যায় টিম। নাদিমের গ্রামের বাড়িতে তার বাবার সাথে কথা বলেন তারা। বাবা আব্দুল করিমও তার ছেলে নাদিম হত্যাকারীদের সঠিক বিচার পাওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করছেন। তিনি বলেন, নাদিম হত্যাকারীদের আড়াল করার অপচেষ্টা হচ্ছে।

সবশেষে বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাব পরিদর্শন করেন সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ সেল বাংলাদেশ-এর নেতৃবৃন্দ। এসময় সেলের চেয়ারম্যান খায়রুল আলম রফিকসহ নেতৃবৃন্দকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয় এবং তারা নির্যাতিত ও নিহত সাংবাদিক নাদিমসহ যে কোন নিপীড়িতের পাশে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় সাংবাদিকরা কেন্দ্রীয় সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।


আপনার মতামত লিখুন :
More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা