আজ
|| ১৩ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২৮শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
ফুলপুরে একটি বেড়িবাঁধের অভাব যেন হাজারো কৃষকের মরণফাঁদ
প্রকাশের তারিখঃ ৬ জুলাই, ২০২৫
মো. আব্দুল মান্নান :
ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার সিংহেশ্বর ইউনিয়নের কুটুরাকান্দা এলাকায় মরহুম আসমত আলী মুন্সির বাড়ি সংলগ্ন মালিঝি নদীর পাড় ঘেঁষে বেড়িবাঁধটি সংস্কার না করায় আমন ফসল ঘরে তুলতে পারেন না কয়েক গ্রামের মানুষ। গত বন্যায় বেশ কয়েক জায়গায় বেড়িবাঁধটি ভেঙে গেছে। এতে ওই ভাঙন দিয়ে বন্যার পানি ঢুকে ফুলপুর সদর ইউনিয়নের বাখাই, ফতেহপুর, মধ্য নগর, বাতিকুড়া, ডেফুলিয়া, নগুয়া, সিংহেশ্বর ইউনিয়নের কুটুরাকান্দা, সঞ্চুর, বালিচান্দা, মোকামিয়া, হরিরামপুর, চাঁনপুর, সিংহেশ্বর, পলাশকান্দা, ঝিগারকান্দা ও কুলিরকান্দা গ্রামসহ প্রায় ২০ গ্রামের মানুষের আমন ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে ওইসব এলাকার কৃষকরা মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়েছেন। শনিবার (৫ জুলাই) সকালে ওই বেড়িবাঁধ এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শনে গিয়ে ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বললে অনেক দুঃখ প্রকাশ করেন তারা।
সঞ্চুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হাজী সিরাজুল ইসলাম তোতা মাস্টার বলেন, মালিঝি নদীর পাড় ঘেঁষে বেড়িবাঁধটির সাথে আমাদের রিজিকের সম্পর্ক। এটি বাধা থাকলে আমরা নিরাপদে থাকি। রিজিকটা পাই। আমন ধানটা আরামে ঘরে উঠাতে পারি। গত বন্যায় এই বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে বাঁধটি বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গেছে। পরে কুটুরাকান্দা গ্রামের আব্দুল বারেকের বাড়ি সংলগ্ন জায়গাসহ কয়েক জায়গায় বাধা হলেও কুটুরাকান্দার মরহুম আসমত আলী মুন্সির বাড়ি সংলগ্ন বেড়িবাঁধটি বাধা হয়নি। অথচ ওটাই হলো মেইন ভাঙন। ওখানে না বেধে শশিকান্ত মহারাজার খামার বাড়ি এলাকায় পৃথক আরেকটি বাঁধ রয়েছে। ওটা বাধা হয়েছিল কিন্তু প্রবল স্রোতের মুখে উহা টেকেনি। এতে গত বছরের আমন ধান কেউ ঘরে উঠাতে পারেননি। ফসল ঘরে তোলার কাছাকাছি সময়ে তলিয়ে গিয়েছিল তলিয়ে গিয়েছিল সব পাকা ধান ক্ষেত। তখন এত কষ্ট লাগছে যেন দুঃখ থোয়ার জায়গা নেই।
কুটুরাকান্দা গ্রামের কৃষক ফজর রহমান বলেন, মালিঝি নদীতে বেড়িবাঁধটি না দেওয়ায় আমরা বহুত ক্ষতিগ্রস্ত। এই যে এখন জালা ফেলানোর সময় অইছে কিন্তু জালা ফেলাইবার সাহস পাইতাছি না। কারণ, ঘরের ধানগুলো নিয়া ক্ষেতে ফালায়াম পরে না জানি কোন সময় বন্যা আয়া ফরে। বন্যা আইলে ত আর উপায় নাই। আসলে আমাদের উন্নতির পথে একমাত্র বাঁধাই অইলো এই মালিঝি নদীর বেড়িবাঁধ।
পলাশকান্দা গ্রামের কৃষক ইসরাফিল হোসেন বলেন, প্রায় প্রত্যেক দিনই ভাঙতেছে মালিঝি নদীর পাড়। আমাদের অনেক ঘর বাড়ি গিল্যা খাইয়ালছে এই নদী। ফসলের জমি না শুধু থাহনের ঘরডাও অনেকের কাইড়া নিছেগা এই নদী। মালিঝি নদীর ভাঙন রোধ করতে হবে। এছাড়া কোন বিকল্প নাই। সরকারের কাছে আমাদের দাবি অইলো- মালিঝি নদীতে শক্ত বেড়িবাঁধ চাই। যাতে আমাদের আমন ধানসহ কোন ধানই নষ্ট না হয়।
Copyright © 2025 দৈনিক বাংলাদেশ নিউজ. All rights reserved.