• বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম
বালিয়া মাদরাসার সহকারী মুহতামিম মাওলানা মোখলেছুর রহমান মন্ডলের ছেলে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত আলেমরা এক হলে দেশ চালাবেন তারা — মাওলানা হাফীজুর রহমান সিদ্দিক, কুয়াকাটা ফুলপুরে ২ অপহৃতকে উদ্ধার ও ৩ অপহরণকারী আটক শেরপুরে ‘গ্রাম পুলিশের দায়িত্ব ও কর্তব্য’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কোর্স উদ্বোধন পাগড়ি পেল খান মেমোরিয়াল এতিমখানা ও হাফিজিয়া মাদরাসার ক্ষুদে ৫ হাফেজ ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দালালদের বিরুদ্ধে অভিযান, ৩ জনকে অর্থদণ্ড ময়মনসিংহের নতুন ডিসি সাইফুর রহমান, বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে অভিনন্দন অবহেলিত ঈশ্বরগঞ্জে উন্নয়নের ছোঁয়া আনব: বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মাজেদ বাবু ফুলপুরে কাঁকড়া মসজিদ-মাদরাসা, গুচ্ছ গ্রাম ও ভোট কেন্দ্রের রাস্তায় মাটি ভরাটের দাবি সুজনকে ময়মনসিংহ-২ আসনে এমপি প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াত

‘এখনো চোখে ভাসে সেই প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট’ – শামছুল হক রাসেল

Reporter Name / ৮৫ Time View
Update : শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫

শামছুল হক রাসেল :

দেড় দশক পেরিয়ে আজ ১৬ বছরে পদার্পণ করল। যা-ই বলি না কেনো সংখ্যা বা বছর দিয়ে আটকানো যাবে না এ ভালোবাসাকে। বলছি, দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের কথা। পত্রিকাটির জন্মলগ্ন থেকে তো বটেই প্রস্তুতি পর্ব থেকে জড়িয়ে আছি। তাই আবেগটা বেশি। দেড় দশক পেরিয়েও বাংলাদেশ প্রতিদিন নিজের শক্ত অবস্থান আঁকড়ে রেখেছে। এর আলোকচ্ছটা ছড়িয়েছে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতেও।

সময়ের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিভিন্ন বিভাগে নিজেকে জড়িয়েছি। বর্তমানে আমার মূল ফোকাসটা অনলাইন বিভাগেই। গত দেড় দশকে ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ সময়টা দিয়েছি এ পত্রিকায়। ২৭ বছর বয়সে যোগ দিয়েছিলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনে। এখন বয়স ৪৩ ছুঁইছুঁই। বলা চলে, যৌবনের সেরা সময়টা দিয়েছি এখানে। ঠিক তেমনি এ পত্রিকাও দিয়েছে অনেক কিছু। জীবনের টার্নিং পয়েন্ট বাংলাদেশ প্রতিদিন। সমাজে পেয়েছি সম্মান ও ভালোবাসা। আদর-স্নেহ পেয়েছি দেশ-বিদেশের অনেক বরেণ্য লেখক, কবি, সাহিত্যিক ও প্রখ্যাত সব সাংবাদিকের। রুটি-রুজির কথা সেটা না হয় নাই বললাম। পেয়েছিও অনেক। কিন্তু সম্মানের কাছে এটা তো কিছুই না।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের ডামি থেকে এখনো জড়িয়ে আছি। ২০১০ সালের মার্চের প্রথম সপ্তাহে হাতে গোনা কয়েকদিন ডামি প্রকাশিত হয়েছিল। অজস্র চ্যালেঞ্জ নিয়ে ১৫ মার্চ বাজারে আসে এ পত্রিকা।একটি পত্রিকা কীভাবে জন্ম নেয় তা স্বচক্ষে অনুধাবন করেছি। সবচেয়ে বড় কথা, সহকর্মীদের যে আন্তরিকতা ও টিমওয়ার্ক দেখেছি দেড় দশকের কর্মজীবনে তা অক্ষরে প্রকাশ করা যাবে না। গোটা বাংলাদেশ প্রতিদিন আমাদের একটি পরিবার। প্রত্যেকটি বিভাগতো বটেই, প্রত্যেক সহকর্মীর মধ্যে রয়েছে এই বন্ধন। দেড় দশকের পথচলায় সহকর্মীদের ভালোবাসা না থাকলে আমি নিজেও হয়তো আজকের এই অবস্থানে আসতে পারতাম না। আর ৯ বছর ধরে অনলাইন ইনচার্জ হিসেবে পথচলা মসৃণ হয়েছে এই বিভাগের সহকর্মীদের অনেক ডেডিকেশন ও দায়িত্ববোধের জন্য। অনলাইন টিমও আমার অনেক সুখ-দুঃখের সাথী।

বাংলাদেশ প্রতিদিন ঘিরে অনেক স্মৃতি। দু-চারটি কথা না লিখলেই নয়। এখনো চোখে ভাসে সেই প্রথম অ্যাসাইনম্যান্ট, পত্রিকা প্রকাশের চার দিন আগে ২০১০ সালের ১০ মার্চ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের রহস্যময় পুকুর নিয়ে ফিচার করতে হবে। যা রকমারি পেজে প্রকাশিত হবে। বলে রাখা ভালো, এ রকমারি পেজ বাংলাদেশ প্রতিদিনের অন্যতম পাঠকপ্রিয় পাতা হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি এ পাতায় লেখালেখির জন্য আমি নিজেও হিংসা করতাম পাতার দায়িত্বে থাকা রণক ইকরামকে (বর্তমানে ফিচার এডিটর)। যেদিন সে অফিস মিস করত সে দিন এই পাতার পেজ মেকাপ ও লেখার দায়িত্ব থাকতো আমার। তাই খুশি হতাম এই ভেবে, আজ রণক নেই তাই আমার লেখা যাচ্ছে। পাতার পেজ মেকাপ করতেন লক্ষণ, এখনো তিনি করেন। রণক না এলে তাকে নিয়ে বসে পড়তাম পেজ মেকাপে। আর কাজ শেষ হলেই চলে যেতাম অফিসের পাশে সিরাজ ভাইয়ের সেই চায়ের দোকানে।

যে কথা বলছিলাম, শহীদুল্লাহ হলের রহস্যময় পুকুরের অ্যাসাইনমেন্ট নিলাম। বলা হল, আলী আফতাবকে (বর্তমানে এটিএন নিউজে কর্মরত) সঙ্গে নিতে। দু,জন মিলে যেন ফিচারটা করি। আফতাব তার ব্যক্তিগত ক্যামেরা সঙ্গে নিয়েছিলো। তা দিয়ে ছবিও তুললাম। ১৫ই মার্চ প্রথম সংখ্যায় ছাপা হলো ‘শহীদুল্লাহ হলের রহস্যময় পুুকুর’। এরপর হয়তো এ পত্রিকায় শতশত ফিচার যেমন- ক্যারিয়ার, স্বাস্থ্য, আইটি বিষয়ক লেখা প্রকাশিত হয়েছে আমার। শোবিজ পাতায়ও নায়ক-নায়িকাকে নিয়ে অনেক লেখা ছাপা হয়েছে। এখনও হচ্ছে। কিন্তু সেই প্রথম লেখার আবেগ ও ভালোবাসা এখনো অন্যরকম।

একটি কথা না বললেই নয়, কম শব্দে এবং গুণগত ভাষা ব্যবহার করে কীভাবে লেখা যায় তা শিখেছি প্রথম পাতার উপরের প্যানেলে যে তিনটি শর্ট নিউজ থাকে তা লিখে। বড় কোনো খবরকে ওই ছয় লাইনে সীমিত করা লাগতো। শব্দ চয়নে আমাকে প্রায়ই হেল্প করতেন কামাল মাহমুদ ও সুমন পালিত ভাই। পত্রিকা প্রকাশের পর টানা ৪ বছর প্রতিদিন তিনটি করে শর্ট নিউজ দিতাম প্যানেলে। একটি দিতাম রাজনীতি, একটি শোবিজ ও আরেকটি খেলার জগৎ থেকে। আমার একটি দুর্বলতা ছিলো, তা হলো দ্রুত কম্পোজ করতে পারতাম না। প্রায়ই আমি মুখে বলতাম আর কি-বোর্ডে কম্পোজ করতেন তোফাজ্জল ভাই। এ কম্পোজ করাকে আমি বলতাম ‘লাইভ কম্পোজ’।

আমার কাছে বাংলাদেশ প্রতিদিন দ্বিতীয় পরিবার। এ পরিবারের জন্য কখনো কখনো আমার প্রথম পরিবার আব্বা-আম্মা, স্ত্রী-সন্তান, ভাই-বোন,
চাচা-চাচীকে খুব একটা সময় দেওয়া হয় না। এমনকি ডিউটি টাইম এবং ডে-অফের শিডিউল ঠিক রাখা যায় না। মাঝে মাঝে আক্ষেপ হয় এ নিয়ে। মিসেস রাসেল এবং জুনিয়র রাসেলেরও অনেক চাপা ক্ষোভ-অনুযোগ থাকে । তবে দিন শেষে একটাই সান্ত্বনা নিজের জন্য না, দেশ ও দশের কথা ভেবে হয়তো পুরোপুরি সময় দিতে পারছি না তাদের। কারণ দায়িত্বটা যে অনেক বড়। আমরা তো খবরের ফেরিওয়ালা। আর খবর কখনো থেমে থাকে না। তাই ফেরিওয়ালাও থামতে পারে না।

লেখক :
অনলাইন ইনচার্জ, বাংলাদেশ প্রতিদিন।
(১৫-০৩-২০২৫)

* অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


আপনার মতামত লিখুন :
More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা