মো. আব্দুল মান্নান :
দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মো. খায়রুল আলম রফিক ভাই (৭ মার্চ) প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য মেসেঞ্জারে আমাকে আগেই বলে রেখেছিলেন। ওইদিন বিশ্বসেরা গবেষক ড. সাইদুর রহমান স্যারের আর্থিক সহযোগিতায় গরিব ও অসহায়দের মাঝে খাবার বিতরণের একটা প্রোগ্রাম ছিল আমাদের। পরে রফিক ভাইয়ের প্রতিদিনের কাগজের প্রোগ্রামে যোগদানের লক্ষ্যে আমাদের খাবার বিতরণের তারিখ পরিবর্তন করি। করে আগের দিন ৬ মার্চ দুপুর ১২টার দিকে আমরা খাবার বিতরণ করি।
প্রতিদিনের কাগজের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠানে গিয়ে ভালবাসায় মুগ্ধ হলাম। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) পত্রিকাটির ৭ম বছরে পদার্পণ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য আয়োজন ছিল। গর্জিয়াস অনুষ্ঠান করেছেন সম্পাদক মহোদয়। যা মনে রাখার মত।

জানা যায়, প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর এ অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা ছিল কক্সবাজারে। কিন্তু বিশেষ কারণে তিনি এটা উদযাপন করেছেন ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার বৈলর বাসস্ট্যান্ড থেকে পূর্ব দিকে কালির বাজারের আগে ‘ড্রীম ভিলেজ রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড ক্যাফে’তে।
জায়গাটি অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। ওখানে যাওয়ার পর আমরা মুগ্ধ হয়েছিলাম। আমার মনে হয়, যে কারো মন তুষ্ট হয়ে যাবে ওখানের পরিবেশ দেখলে। আশপাশে সব ধানের জমি থাকলেও মাঝখানে ৪৮ একর জমি নিয়ে ৯ জন রুচিশীল মানুষ মানুষকে আনন্দ দিতে গ্রামে হাতের কাছে গড়ে তুলেন এ ‘ড্রীম ভিলেজ রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড ক্যাফে’ নামে পিকনিক স্পট।

এ স্পটে ঢুকেই মনটা ভরে গেছে। সারিবদ্ধ বিদেশি গাছগাছালি, মনোমুগ্ধকর রং-বেরঙের ফুল বাগান, পুকুর। শিশুদের খেলার মাঠ, দোলনা, রেলে চড়ার ব্যবস্থা, পাখপাখালি, হরিণ, বাঘ ভাল্লুকের ভাস্কর্য, অভিভাবকদের জন্য গাছগাছালির নিচে একটু রেস্ট নেওয়ার ব্যবস্থা, টয়লেটে সাবান ও টিস্যু; সব মিলিয়ে চমৎকার ও দেখার মত একটি স্পট।
এগুলো দেখতে দেখতে যুহরের নামাজের সময় হয়ে যায়। অজু ছিল আগে থেকেই। তাই নামাজের একেবারে পূর্ব মুহূর্তে মসজিদের অনুসন্ধান করি। আমার ধারণা ছিল এত সুন্দর একটি পিকনিক স্পটে মসজিদ তো অবশ্যই আছে। কিন্তু অবশেষে খোঁজ নিয়ে দেখা গেলো, ওখানে এত কিছু থাকলেও নেই কোন মসজিদ। মসজিদ নেই, তা ছিল আমার ধারণার বাইরে।

অবশেষে ওই স্পটের বাইরে যেতে হয়েছিল যুহরের নামাজ আদায় করতে। তাও এত দূরে যে, অনেকটা হাঁটতে হয়েছে। অবশেষে একটি বাজারের পাশে গিয়ে মসজিদ পেলেও পাইনি জামাত। মসজিদে ঢোকার সাথে সাথেই সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করেন ইমাম।
কষ্টে আমার কান্না আসার উপক্রম হয়েছিল। জামাত ছুটে যাওয়ার কষ্টটা যেন সহ্য হচ্ছিল না। আর যত ক্ষোভ গিয়ে পড়ছিল ওই পিকনিক স্পট কর্তৃপক্ষের উপর। কেন তারা এত কিছু বানাতে পারলেও মসজিদ বানাতে পারলেন না?

যাক, আফসোস করতে করতেই একজন মুরুব্বি এসে হাজির হলেন। কথাবার্তার এক পর্যায়ে বললেন, আমিও জামাত পাইনি। লন আমরা দুইজনে জামাত করে ফেলি। পরে উনার সাথে দুইজনে জামাতে যুহরের নামাজ আদায় করি।
নামাজশেষে পিকনিক স্পটে এসে ম্যানেজারের সাথে কথা বলি এবং মসজিদ কেন নেই জানতে চাই। পরে ম্যানেজার বললেন যে, সব কিছুর প্ল্যান করা আছে। মসজিদের জায়গা নির্ধারণ করা আছে। স্পটের কাজ চলমান কিন্তু এখনো মসজিদের কাজ ধরা হয়নি।

এসময় তিনি আরও বলেন, ৪৮ একর জায়গা নিয়ে রুচিশীল একটি পিকনিক স্পট উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা ও শিল্পপতিসহ ৯ জনের একটি টিম এ কাজ হাতে নিয়েছেন। এটি সম্পন্ন হলে বৃহত্তর ময়মনসিংহের পর্যটকদের মাঝে এ স্পটটি ব্যাপক সাড়া ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এসময় ম্যানেজারের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ প্রতিবেদক জরুরিভিত্তিতে একটি মসজিদ নির্মাণের দাবি জানান।